আপনাকে অজ্ঞান বা অবশ করার আগে ডাক্তারকে যে ৭টি বিষয় অবশ্যই জানাবেন

0
163
অ্যানেসথেসিয়া বা অজ্ঞান করার ব্যাপার নিয়ে সবার মধ্যেই কমবেশি ভয় কাজ করেছবি: পেক্সেলস ডটকম

বর্ণমালা নিউজ ডেস্কঃ

অ্যানেসথেসিয়া বা অজ্ঞান করার ব্যাপার নিয়ে সবার মধ্যেই কমবেশি ভয় কাজ করে। সঠিক প্রস্তুতি না নিলে অনেক সময় অ্যানেসথেসিয়া থেকে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে।

অ্যানেসথেসিয়া মূলত তিন ধরনের

জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বা সম্পূর্ণ অজ্ঞান করা: পেটের ভেতরে বা মাথার অপারেশনে বা দীর্ঘ সময়ের অপারেশনে এটি করতে হয়।

রিজিওনাল অ্যানেসথেসিয়া বা কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গ অবশ করা: এভাবে সিজারিয়ান করা হয়।

লোকাল অ্যানেসথেসিয়া বা কোনো অঙ্গের নির্দিষ্ট একটি অংশ অবশ করা: শরীরের কোনো অংশের ফোড়া (অ্যাবসেস) কাটা বা ছোট কোনো কাটা অংশ রিপেয়ার বা সেলাই করার জন্য এটি করা হয়।

বেশির ভাগ মানুষ সবচেয়ে বেশি ভয় পান প্রথমটি বা জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ায়।
কোনো যন্ত্র বা মেশিনারিজে সমস্যা হলে আমরা যেমন মেশিন বন্ধ করে সমস্যা ঠিক করি, অ্যানেসথেসিয়াও অনেকটা সে রকম। শরীরের সব যন্ত্র বন্ধ করার উপায় নেই, সে জন্যই সবকিছু চলমান রেখেই অজ্ঞান করা হয়। তবে অজ্ঞান করার কাজে যেসব ওষুধ ব্যবহৃত হয়, তা প্রয়োগ করার আগে কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়।

সঠিক প্রস্তুতি না নিলে অনেক সময় অ্যানেসথেসিয়া থেকে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারেছবি: পেক্সেলস ডটকম

অজ্ঞানের আগে কিছু বিষয় ডাক্তারকে অবশ্যই জানাবেন:

১. ফুসফুসের কোনো সমস্যা আছে কি না, যেমন হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিস। ধূমপানের অভ্যাস আছে কি না। বুকের একটি এক্স–রে করাতে হবে।

২. হার্টের সমস্যা আছে কি না বা এ জন্য নিয়মিত কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কি না। অ্যানেসথেসিয়া নেওয়ার আগে ইকোকার্ডিওগ্রাফি, ইসিজি একটি রুটিন পরীক্ষা করাতে হবে।

৩. কিডনির কোনো সমস্যা আছে কি না। রেনাল ফাংশান টেস্ট, প্রয়োজনে ই-জিএফআরও লাগতে পারে।

৪. ডায়াবেটিস আছে কি না, থাকলে নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, দেখে নিতে হবে। যেকোনো কাটাকুটিতেই এটি জরুরি।

৫. যাঁরা আগে থেকে হার্টের সমস্যা বা স্ট্রোকের জন্য রক্ত তরলীকরণের ওষুধ খান, তাঁদের ক্ষেত্রে সার্জনের পরামর্শমতো অপারেশনের কয়েক দিন আগে তা বন্ধ করতে হবে।

৬. যেকোনো বড় অপারেশনের আগে রোগীকে মুখে না খাওয়ার জন্য বলা হয়ে থাকে, সাধারণত তা ছয় ঘণ্টা বা তার বেশি সময়। অজ্ঞান করার কারণে শরীরের ভেতরের অঙ্গ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন পেটে কিছু থাকলে বমির ঝুঁকি থাকে। অচেতন অবস্থায় বমি হলে তা ফুসফুসে চলে যেতে পারে, হয়ে যেতে পারে বিরাট ক্ষতি। জীবননাশের আশঙ্কা তৈরি হয়। অরেশনের রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের এগুলো মাথায় রাখা জরুরি।

৭. রক্তের পরিমাণ ঠিক আছে কি না, সেটি জানাও জরুরি। পরিমাণ কম থাকলে বা অপারেশনে রক্তপাতের ঝুঁকি থাকলে রক্ত জোগাড় করে রাখতে হবে।

অপারেশনের আগে এই বিষয়গুলো একজন অ্যানেসথেসিয়া স্পেশালিস্ট ডাক্তার চেক করে নেবেন। যা কিছু প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনকে জানাবেন। তাহলেই অজ্ঞান–সম্পর্কিত ভয় কেটে যাবে।

ড. হিমেল বিশ্বাস, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, নিউরোমেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, পান্থপথ, ঢাকা।

বর্ণমালা নিউজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here