বর্ণমালা নিউজ ডেস্কঃ
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদন মিলেছিল গত বছরের ডিসেম্বরেই। অবশেষে দেশজুড়ে কার্যকর হতে চলেছে তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকেই ভারতে কার্যকর হবে দণ্ডবিধিসংক্রান্ত তিনটি নতুন আইন। ফলে ভারতীয় আইনব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া নিয়মগুলো।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮৬০ সালে তৈরি ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা দিয়ে এবং ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের বদলে আসতে চলেছে ভারতীয় সাক্ষ্য আইন।
গত ১১ আগস্ট ভারতের সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করেছিলেন।
বিল পেশের সময় তিনি দাবি করেছিলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং সাক্ষ্য অধিনিয়ম শীর্ষক ওই তিনটি বিল আইন থেকে ‘ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ জামানার প্রভাব এবং দাসত্বের মানসিকতা’ দূর করবে।
আনন্দবাজারের তথ্য অনুসারে, কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধী দলগুলোও তাড়াহুড়া করে বিল পাসের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু বিল পাস করতে বেগ পেতে হয়নি নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। সেই বিলে রাষ্ট্রপতি সইও করে দেন।
এবার সেই নতুন আইনই বলবৎ হতে চলেছে দেশটিতে। জানুয়ারি মাসেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, এক বছরের মধ্যে এই নতুন তিনটি আইন কার্যকর হবে। এবার তার দিনক্ষণও জানানো হলো।
এদিকে নতুন তিন আইনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। কিছু নিয়মে বদলও আনা হয়েছে।
নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে আরো কঠোর সাজার বিধান থাকছে নতুন আইনে। এ আইনে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা আজীবন কারাদণ্ড। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ২০ বছর থেকে আজীবন জেলের সাজার কথা বলা হয়েছে।
এমনকি নারীদের হার বা মোবাইল ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার বিচারের জন্যও রয়েছে নতুন আইন। যৌন সহিংসতার মামলার ক্ষেত্রে নির্যাতিত নারীর বয়ান তাঁরই বাড়িতে একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নথিবদ্ধ করার কথাও জানাচ্ছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। বিয়ে বা চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অপরাধের জন্য ১০ বছরের সাজার কথা বলা হয়েছে এতে। এ ছাড়াও সন্ত্রাসবাদ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধের ক্ষেত্রেও আরো কঠোর সাজার কথার উল্লেখ থাকছে নতুন আইনে।
বর্ণমালা নিউজ।