যে কারণে ঐক্যে জোর বিএনপির

0
17

বর্ণমালা নিউজ ডেস্কঃ

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলসহ গণতন্ত্রমনা সব মানুষের মাঝে যে কোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখতে চায় বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারকদের মতে, যে কোনো সফলতার পূর্বশর্তই হচ্ছে ঐক্য। ফ্যাসিবাদের পতন হলেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আগেই তা নস্যাতে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে চতুর্দিক থেকে। দেশ-বিদেশে তৎপর বিভিন্ন চক্রান্তকারী মহল। পতিত স্বৈরাচার আবারও আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ফিরে আসার। এই ফ্যাসিবাদের পুনঃপ্রবর্তন রোধ করতে হবে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের হাত থেকে সরকার ও দেশকে রক্ষা করতে হবে। একটি ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা তথা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। এ লক্ষ্যে সব গণতন্ত্রকামী দল, সংগঠন ও মানুষের মধ্যে যে কোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রেখে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় দেশ আবারও গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে। এমন শঙ্কা বিএনপির নীতিনির্ধারণী মহলের সদস্যদের। তারা যে কোনো মূল্যে সবার ঐক্য ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের দেশের সর্বস্তরের শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে এই ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই। চক্রান্ত থেমে নেই। দেশ-বিদেশ থেকে তারা তৎপরতা চালাচ্ছে। এসব অপতৎপরতা রোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। আর একটা কথা মনে রাখতে হবে- ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমাদের গণতন্ত্রমনা সব দল ও মতের সমর্থনে এই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এ সরকারকে কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই সরকারের ব্যর্থতা মানে- আমাদের সবার ব্যর্থতা। এজন্য বলব- ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট উত্তরণে ‘অনৈক্য সৃষ্টি না করে ঐক্যের মাধ্যমে’ সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের এখন লক্ষ্য একটাই হওয়া উচিত। সেই লক্ষ্য হচ্ছে- সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন সেগুলো ন্যূনতম সম্পন্ন করে নির্বাচন করা। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চাই। আর সেজন্য আমাদের সবারই এখন উচিত, ঐক্যের মধ্যে থেকে (ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে) আমরা যে সুযোগ পেয়েছি, সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অন্তত আমরা আরও কিছুটা হলেও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। কারণ আমাদের এখন সময় হয়েছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা লিবারেল ডেমোক্রেসির পথে এগিয়ে যাওয়ার। সবাইকে শান্ত থেকে বিষয়গুলো অনুধাবন করে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার এবং ‘সবাইকে সঙ্গে নিয়ে’ একসঙ্গে পথচলার। বিএনপি মহাসচিব এ প্রসঙ্গে সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ যে কোনো সময় আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আমরা এমন কিছু করব না, এমন কোনো হঠকারিতা করব না, যে হঠকারিতার মধ্য দিয়ে আমরা আবার অন্ধকারের মধ্যে চলে যাব।

এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারের পতন পর্যন্ত যত বড় বড় সফলতা এসেছে- তার সবগুলোই এসেছে জাতীয় পর্যায়ের ঐক্যের মাধ্যমে। এই যে গত ৫ আগস্ট এত বড় একটা ভয়ংকর স্বৈরাচারের পতন হলো- সেটিও কিন্তু ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে দেশের সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যের মাধ্যমেই এসেছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্রকারীরা চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। যাতে এই বিজয় নস্যাৎ হয়ে যায়, স্বৈরতন্ত্র আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসে। কিন্তু আমরা এটা কিছুতেই হতে দেব না ইনশাআল্লাহ। আগামীতে দেশে আবারও একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যার মাধ্যমে দেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাবে। এজন্যই আমাদের সবাইকে যে কোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্য ধরে রাখতে হবে। বিএনপির অপর নীতিনির্ধারক ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যে কোনো সাফল্যের পূর্বশর্ত হলো ঐক্য। এই ঐক্য যত শক্তিশালী হবে- ষড়যন্ত্র তত নস্যাৎ হবে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন হলেও ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আগেই তা নস্যাতের জন্য গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। আর সেজন্যই যে কোনো মূল্যে সব গণতন্ত্রকামী দল ও মানুষের মধ্যে ঐক্যটাকে ধরে রাখতে হবে।

বর্ণমালা নিউজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here