বর্ণমালা নিউজ ডেস্কঃ
আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে তফসিল বাতিল ও বিরোধী নেতাকর্মীদের মুক্তি প্রদানের আহ্বান করা হয়।
দেশের বর্তমান সাংবিধান এবং রুলস অব বিজনেস অনুসারে প্রধানমন্ত্রী সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। যিনি একাধারে দলীয় প্রধান, সরকারের নির্বাহী প্রধান এবং সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধান। সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন সরাসরি তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
তাঁরা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে লক্ষ করছি সরকার ২০১৪ ও ২০১৮-এর ন্যায় আরো একটি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একের পর এক বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ২৮ অক্টোবর পরবর্তী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গায়েবি মামলা দায়ের এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মৃত, গুম, বিদেশে অবস্থানরত, ইতিপূর্বে গ্রেপ্রতা হয়ে কারান্তরীণ ব্যক্তিদেরও নতুন মিথ্যা মামলায় আসামি করা হচ্ছে। এমনকি মৃত ও গুমের শিকার অনেক নেতাকর্মীদের সাজানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। আইনবহির্ভূতভাবে পিতার পরিবর্তে পুত্রকে, পুত্রের পরিবর্তে পিতাকে, ভাইয়ের বদলে অন্যভাই বা আত্মীয়স্বজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আরো উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে রাতের অন্ধকারে মুখোশধারী এবং হেলমেট বাহিনী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে চলেছে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন সরকারের একতরফা নির্বাচনে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
তাঁরা বলেন, এ দেশের ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে সংবিধানের বাইরে গিয়েও বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব। কারণ নিকট অতীতে অর্থাৎ ১৯৯১ সাল এবং ২০০৮ সালে সংবিধানের বাইরে গিয়ে এ কাজটি করার নজির রয়েছে। ১৯৯১ সালে ঘটনাত্তোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
তাঁরা বলেন, আরো একটি বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট আরো ঘনীভূত হবে। দেশের ও আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগকে উপেক্ষা করে আরো একটি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হলে এর সব দায়-দায়িত্ব মূলত সরকারকে বহন করতে হবে বলে আমরা মনে করি।
তাঁরা বলেন, আমাদের সংবিধানের মূল চেতনাই হচ্ছে, প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা, সামাজিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার গণতন্ত্রের আবশ্যকীয় নিয়ামক। বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে একটি দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করার জন্য আমরা ঘোষিত তফসিল বাতিল করার আহ্বান জানাচ্ছি। এ লক্ষ্যে আমরা অবিলম্বে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে একটি সুস্থ ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বর্ণমালা নিউজ।